সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা অজান্তে গীবত, পরনিন্দা করে থাকি। আমাদেরকে সতর্ক সচেতনতা অবলম্বন করা উচিত।
♦️👉সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুকে অজান্তেই মানুষ সারাক্ষণ #গীবত ও পরনিন্দা করে থাকেন সাবধান, সতর্কতাঃ সচেতন হউন।
♦️ গীবত ও পরনিন্দা করার অভ্যাস যুগ যুগ ধরে পৃথিবীতে ছিল এবং আজও আছে। বলাই বাহুল্য যে থাকবে। কিন্তু লক্ষ্য করলেই দেখতে পাবেন যে, ফেসবুকে যেন এই পরচর্চা ও গীবত করা মানুষের সংখ্যা মারাত্মক রকম বেশি।
♦️ফেসবুকে ঢুকলেই দেখা যায় কিছু মানুষ সারাক্ষণ এটা-ওটা-সেটা নিয়ে পরচর্চা করছেন। এর-তার নিন্দা করছে, এর সমালোচনা করছে, অমুকের বদনাম ছড়াচ্ছে। এই ধরণের মানুষদের কাছে যেন পৃথিবীর সবাই খারাপ। কেউ তার চোখে ভালো না, কেউ তার প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য না।
♦️তাহলে গীবত বা পরনিন্দা করা ইসলামের দৃষ্টিতে জঘন্য অপরাধ। কোনো ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তার দোষ-ত্রুটি আলোচনা করার নামই গীবত। চাই তা কথা, ইশারা-ইঙ্গিত বা লেখনীর মাধ্যমে হোক, কিংবা সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুকে মাধ্যমে ।
________________________________♦️শুনুন মহান আল্লাহ তাআলা কুরআন কারিমে এরশাদ করেন:
•‘হে মুমিনগণ! তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাকো। নিশ্চয়ই কতক ধারণা গোনাহ। কারো গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারো পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি স্বীয় মৃত ভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করতে পছন্দ করবে? বস্তুত তোমরা তো একে ঘৃণাই করো’
(সূরা হুজুরাত : ১২)।
• পবিত্র কুরআনে আরো এরশাদ হয়েছে-‘প্রত্যেক পশ্চাতে ও সম্মুখে পরনিন্দাকারীর জন্য দুর্ভোগ’
(সূরা হুমাজাহ আয়াত : ০১)।
• কুরআনে আরো এরশাদ করেন:
হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না’ (সূরা হুজরাত : ১১)।
♦️ অতএব গীবত সম্পর্কে কয়েকটি হাদীস বর্ণিত:
• হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত, একদা রাসূল সা: সাহাবায়ে কেরামগণকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কি বলতে পারো, গীবত কাকে বলে? সাহাবিগণ আরজ করলেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সা:ই ভালো জানেন। তখন রাসূলুল্লাহ সা: এরশাদ করলেন, গীবত হলো কোনো ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তার এমন দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করা, যা শুনলে সে অসন্তুষ্ট হয় এবং অন্তরে আঘাত পায়, তাকেই গীবত বলে। অর্থাৎ কারো অনুপস্থিত তার এমন দোষ বলা, যা বাস্তবেই তার মধ্যে আছে, তাই গীবত বা পরনিন্দা। আর যদি তার মধ্যে সেই দোষ না থাকে, তবে তা অপবাদ (তুহমত) হবে। যা গীবত থেকেও মারাত্মক গুনাহ (মুসলিম শরীফ : ২৫৮৯)।
• হজরত অবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত রাসূল সা: এরশাদ করেন, তোমরা একে অপরের পরনিন্দা করো না। আর পরনিন্দা হলো অপর ভাইয়ের এমন দোষ বর্ণনা করা যা তার অপছন্দ। যে ব্যক্তি অপর মুসলমানদের দোষ অনুসন্ধান করে আল্লাহ তার দোষ অনুসন্ধান করেন। আল্লাহ যার দোষ অনুসন্ধান করেন তাকে লাঞ্ছিত ও অপমানজনক শাস্তি দেবেন (তিরমিজি : ২৬৩৯)।
• হাদিসে বর্ণিত আছে, একদা কোনো প্রয়োজনে এক মোটা মহিলা রাসূল সা:-এর খেদমতে আসেন। সে মহিলা চলে যাওয়ার পর হজরত আয়েশা রা: রাসূল সা:-এর কাছে ওই মহিলার দৈহিক কাঠামো মোটা হওয়ার ত্রুটি বর্ণনা করেন!
আয়েশা রা:-এর এ কথা শুনে রাসূল সা:-এর চেহারা মলিন হয়ে গেল। তখন রাসূল সা: বললেন, আয়েশা তুমি ওই মহিলাটির গীবত করলে! তুমি এমন কথা বললে যা সমুদ্রে নিক্ষেপ করলে সমুদ্রের পানির রং পরিবর্তন হয়ে কালো হয়ে যেত। আয়েশা রা: বলেন, তার মোটা হওয়ার কথাই তো বলছি এবং এই ত্রুটি তো তার মধ্যে রয়েছে। রাসূল সা: বলেন, হে আয়েশা যদিও তুমি সত্য কথা বলেছ কিন্তু তুমি তার ত্রুটি বর্ণনা করায় তা গীবত তথা পরনিন্দা হয়ে গেল (মুসলিম শরীফ : ২৭৬১)।
• রাসূল সা: এরশাদ করেন, ‘তোমরা অন্যের দোষ অন্বেষণ করবে না, গুপ্তচরবৃত্তি করবে না, পরস্পর কলহ করবে না, হিংসা-বিদ্বেষ করবে না’ (মুসলিম শরীফ : ১৯০৩)।
♦️তবে কোনো ব্যক্তির অনিষ্ট থেকে, ব্যক্তি ও দেশ কিংবা জাতিকে বাঁচাতে গীবত করা অপরাধ নয়। ব্যক্তি এবং জাতিকে সচেতন করার উদ্দেশে তাদের দোষগুলো মানুষকে জানিয়ে দেয়া আবশ্যক। এ ক্ষেত্রে গীবত করা জায়েজ।
♦️পরিশেষে বলা যায় গীবত ও পরনিন্দা মানুষের ঈমান-আমলকে বিনষ্ট করে দেয়। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের এসব নিন্দনীয় কাজ থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
♦️👍গীবত পরনিন্দা থেকে নিজে বাঁচুন, অন্নকে বাঁচাতে পোস্টটি #শেয়ার করে পড়ার সুযোগ করে দিন।
সংগ্রহ:
G M Rafiqul Islam
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
মানুষের একটি ভালো কথা যেমন একজনের মন জয় করে নিতে পারে, তেমনি একটু খারাপ বা অশোভন আচরণ মানুষের মনে কষ্ট আসে। সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হিসেবে আমাদের উচিৎ সর্বদা মানুষের সঙ্গে ভালো ও সুন্দরভাবে কথা বলা।